হযরত সাআদ ইবনে উবাদাহ (রাঃ)
ওয়ালি উল্লাহ
সিরাজ: হযরত সাআদ ইবনে উবাদাহ (রা:) জাহিলিয়াতের ও ইসলামের একজন অভিজাত
নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন বনি সায়েদার প্রতিনিধি। তিনি অনেক যুদ্ধে আনসারীদের
পক্ষ থেকে পতাকা বহন করেছেন।
গোপনে বায়াতে
আকাবা সম্পন্ন হওয়ার পর আনসারগণ সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এদিকে কুরাইশরা
রাসুল (সা:) কাছে তার বায়াতের কথা জানতে পারল। এতে কুরাইশরা উন্মাদ হয়ে গেল।
মক্কার কুরাইশরা বায়াতের পর মদিনা থেকে মক্কায় আগুন্তুকদের পথরোধ করে
দাঁড়ালো। সাআদ ইবনে উবাদা (রা:) সেই সময় মদিনা থেকে মক্কায় আসছিলেন তাই তাদেরকে
মক্কার কাফেররা ধরে নিয়ে গিয়েছিল এবং তাদের সকলের হাত পিঠমোড়া করে বাঁধা
হয়েছিল। তাদের সবাইকে মারধরও করা হয়েছিল।
হযরত সাআদ ইবনে
উবাদাহ (রা:) প্রত্যেকদিন রাসুল (সা:) এর জন্য ছারীদ ও গোশত ভর্তি গামলা বহন
করতেন। সেগুলি নিয়ে উম্মতজননীদের কাছে যেতেন। নবী (সা:) তার জন্য দোয়া
করতেন,
হে আল্লাহ তোমার দয়া ও রহমত সাআদ ইবনে উবাদার পরিবারের উপর নাযিল
কর। (আবু দাউদ)
হযরত সাআদ ইবনে
উবাদাহ (রা:) একবার নবীর দরবারে এসে বললেন, আমার মা মারা গেছেন। তার কিছু
মানত ছিল। আমি তার পক্ষ থেকে কোন গোলাম মুক্ত করে দিলে তা আদায় হবে কি? রাসুল
(সা:) বললেন,
তোমার মায়ের পক্ষ থেকে আদায় করে দাও। (নাসাঈ)
মক্কা
বিজদে দিন নবী (সা:) হযরত সাআদ ইবনে উবাদাহকে একটি দলের আমীর
নিযুক্ত করেছিলেন।
একদিন সাআদ ইবনে
উবাদাহর পুত্র জাবেরকে রাসুল (সা:) বললেন, হে জাবের! আল্লাহপাক যার সাথেই
কথা বলেন,
পর্দার আড়াল থেকেই বলেন। ব্যতিক্রম কেবল তোমার বাবার বেলায়।
কেননা আল্লাহ পাক তোমার বাবার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন। নবী (সা:) বলেন, তোমার
বাবা পুনরায় দুনিয়াতে এসে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার আশাবাদ ব্যক্ত
করে বলেন,
হে আল্লাহ আমার পরবর্তীতে যারা এসেছেন তাদের সকলকেই তোমার নেয়ামত
ভরপুর করে দিয়েছ। এই সময় আল্লাহপাক আয়াত নাযিল করে বলেন, “যারা আল্লাহর
পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না। তারা আসলে জীবিত। নিজেদের রবের কাছ
থেকে তারা জীবিকা লাভ করছে। আল্লাহ নিজের অনুগ্রহ থেকে তাদেরকে যা কিছু
দিয়েছেন তাতেই তারা আনন্দিত ও পরিতৃপ্ত এবং যেসব ঈমানদার লোক তাদের পরে এ
দুনিয়ায় রয়ে গেছে এবং এখনো সেখানে পৌঁছেনি, তাদের জন্যও কোন ভয় ও দুঃখের
কারণ নেই,
একথা জেনে তারা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছে।” (আল ইমরান:১৬৯-১৭০)
No comments